ঈদ এসেছে স্বল্প আয়ের মানুষের বাজারেও

কেরানীগঞ্জেও ঈদ এসেছে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য

আগানগর কেরানীগঞ্জ জিনজিরা

প্রতিবেদকঃ মোঃ রাহাত হোসেন

আসন্ন পবিত্র ঈদুল উল ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কেরানীগঞ্জের মার্কেটগুলোতে জমে উঠেছে কেনাকাটা। উচ্চবিত্তরা নগরীর নামিদামি শপিংমল থেকে কেনাকাটা করলেও স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা রাস্তার পাশের ফুটপাতের বাজারগুলো। এ সব বাজারই এই মানুষগুলোর ঈদকে রাঙিয়ে তুলবে। নিজেদের মতো করে ঈদ উদযাপন করবেন তারা।

ঈদের কেনাকাটায় নিম্ন আয়ের মানুষরা ছিলেন বেতন-বোনাসের অপেক্ষায়। এই সময়ে এসে কেউ হয়তো বেতন-বোনাস পেয়েছেন, কেউ রয়েছেন অপেক্ষায়। যারা পেয়েছেন তারা শুরু করেছেন ঈদের কেনাকাটা। যারা পাননি তাদের অনেকেই মার্কেট ঘুরে দর-দাম দেখছেন। এতে জমে উঠেছে স্বল্প আয়ের মানুষের ঈদের বাজার।

রাজধানীর কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতের পাশে বাজার রয়েছে। এরমধ্যে কদমতুলি,জিঞ্জিরা ও আগানগরের ব্রীজের নীচের ফুটপাতের বাজারগুলো অন্যতম। এখানে শিশুদের পোশাকসহ বড়দের শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি-পাজামা, সালোয়ার-কামিজ, জুতা-মোজা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, বেল্টসহ নানা ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। এখান থেকে পছন্দমতো কেনাকাটা করে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে।

বুধবার (০৩ এপ্রিল) রাতে আগানগরের হলের সামনে এবং ব্রীজের নীচে অস্থায়ী দোকানগুলোয় ঘুরে স্বল্প আয়ের মানুষের ঈদের কেনাকাটার চিত্র দেখা যায়।

কদমতুলির ফুটপাতে শিশুদের পোশাক বিক্রি করেন মো. সাগর। তিনি বলেন, ‘সাধারণত যারা পোশাককর্মী বা দিনমজুরের কাজ করেন, তারা আমাদের এখানে কেনাকাটা করতে আসেন। আবার মধ্যবিত্তরাও আসেন। অনেক মধ্যবিত্ত মানুষ আছেন, যারা বেতনে কুলাতে পারেন না, আর্থিক সামর্থ্য কম। তারা এখানে কেনাকাটা করতে আসেন।

কদমতুলির ফুটপাতে জুতা বিক্রি করেন খালেক মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমার বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। আজ বিক্রি মোটামটি বেড়েছে। কয়েকদিন পর আরও বাড়বে।

কদমতুলির ফুটপাতে পাঞ্জাবি বিক্রেতা কাসেম বলেন, ‘আমার ভ্যানে শুধু পাঞ্জাবি আছে। দাম ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।’ বেচাকেনা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেচাকেনা মোটামুটি হচ্ছে।’

জেলা পরিষদে গেঞ্জি এবং সার্ট বিক্রি করছিলেন রাব্বি। ঈদের বাজারে বেচাকেনার অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষ আসছে ভালোই, বিক্রিও হচ্ছে। কেউ কেউ আবার দর-দাম করে চলে যাচ্ছেন।’

এ সময় কাছে থাকা শার্টগুলো দেখিয়ে রাব্বি বলেন, ‘একবারে বেশি করে কিনে আনি। কার্টুনে বিক্রি করি। মার্কেটেও এই শার্টই আছে। সেখানে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা বিক্রি করা হবে। আমরা বিক্রি করছি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। সবাই ওখান থেকে কিনতে পারে না। যাদের সামর্থ্য কম তারা আমাদের কাছ থেকে কিনেন।

কদমতুলির রাস্তার পাশের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখানে শিশুদের ফ্রক ৩০০-৭০০ টাকা, শিশুদের টিশার্ট ৬০-২০০ টাকা, প্যান্ট ৩০০-৫০০ টাকা, শার্ট ২৫০-৫০০ টাকা, বড়দের জিনসের প্যান্ট ২৫০-৬০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৪০০-৬০০ টাকা, পাজামা ২৫০-৩০০ টাকা, শিশুদের জুতা ও স্যান্ডেল ১০০-৪০০ টাকা, বড়দের স্যান্ডেল ২৫০-৪০০ টাকা, মেয়েদের হ্যান্ডব্যাগ ২০০-৩০০ টাকা, বেল্ট ১০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা নিজের বা পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছেন। কেউ এসেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউবা একা; আবার কেউ এসেছেন বন্ধুর সঙ্গে।

চায়ের দোকানদার বাবার সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন তামিম হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী।  ঈদের কেনাকাটা করবো। আজ শুধু ছোট ভাইয়ের জন্য দুইটা গেঞ্জি কিনেছি। আবার এসে বাবা- -মা ও আমার জন্য কিনবো। দেখলাম বড়দের থেকে শিশুদের জামা-কাপড়ের দাম বেশি।

সালমা বেগম নামে  এক মহিলা এসেছেন দুই সন্তান নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী ব্যান চালক। সে কেনাকাটার সময় পায় না। তাই আমিই সন্তানদের নিয়ে বের হয়েছি। ছেলের জন্য গেঞ্জি আর প্যান্ট কিনেছি, মেয়ের জন্য ফ্রক।

আরোও পড়ুনঃ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারক চক্রের ০৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ১০