প্রতিবেদকঃ মোঃ রাহাত হোসেন
হামিদুর রহমান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে ভাষার মাসে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘পুরান ঢাকার থেকে শেখা: জীবন্ত ঐতিহ্যের ভবিষ্যৎ অনুসন্ধান’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুঁই এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
আয়োজনে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এ দিনে আমি এখানে উপস্থিত হতে পেরে আনন্দিত। এই প্রদর্শনীতে পুরান ঢাকার ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষ করে নদীকেন্দ্রিক এই শহর কীভাবে দিনে দিনে গড়ে উঠেছে, সেই ধারণা স্পষ্ট হয়েছে।
এখানে ফরাশগঞ্জের চিত্র উঠে এসেছে। এই ফরাশগঞ্জের সমৃদ্ধির সঙ্গে ফরাসিদের গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস জড়িয়ে আছে।
এসময় ম্যারি মাসদুপুঁই এই প্রদর্শনীর সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
নসরুল হামিদ তার বক্তব্যের শুরুতে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে কেরানীগঞ্জ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে।
এই কেরানীগঞ্জবাসী পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। আবার ঢাকা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সেফ শেল্টার দিয়েছে। ঢাকা যদি সিটি হয়, তাহলে কেরানীগঞ্জ সাব-সিটি।
ঢাকাকে বাঁচাতে যে অক্সিজেনের (প্রাত্যহিক চাহিদা) প্রয়োজন সেটার সরবরাহ হয় কেরানীগঞ্জ থেকে। তাই পুরান ঢাকার ঐতিহ্য আর কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্য আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে।
এসময় তিনি পুরান ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য অনুসন্ধানে শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
এর আগে, পুরান ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। যেখানে ভিন্ন ধারার ভিডিও প্রদর্শনীর মধ্যদিয়ে পুরান ঢাকার আদি ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়।
এই প্রদর্শনীটি ENSA, প্যারিস লা ভিলেট, বুয়েট, ঢাকা, BVCOA, নভি মুম্বাই, C.A.T., Trivandrum এবং মোকলো বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়া মতো মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গবেষক দল দ্বারা পরিচালিত, যা একটি দুই সপ্তাহের নিবিড় স্থাপত্য গবেষণার চূড়ান্ত ফলাফল। যার মধ্যদিয়ে পুরান ঢাকা বিপন্ন ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে।
মোট ৮টি স্থানকে প্রাধান্য দিয়ে প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে— বড় কাটরার বিবর্তন, আরমানিটোলা পাড়া, পুরান ঢাকা আরমানিটোলা পাড়ায় সর্বজনীন উন্মুক্ত স্থানগুলো, শাঁখারি চুড়ি তৈরি, তাঁতিবাজার, বাংলাবাজার, গোল তালাব, মঙ্গোলাবশ জমিদার প্রাসাদ। আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ৪৪ জন শিক্ষার্থী ও ১২ জন পরামর্শদাতা।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথ গ্লোবাল ফাউন্ডেশন ও বাঁধন সোসাইটি অফ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. সীমা হামিদ, কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, বিখ্যাত ফরাসি শিল্পী রামোনা পোয়েনারু, শিল্পী আপন বিশ্বাস, জায়েদ মালেক অনন্য, পিনাকী নাথ, রুশমিলা হোসেন রাশপি, সাইফ আলম নাবিল, শোয়েব হোসেন বাপ্পিসহ পুরান ঢাকার ছয়জন পোর্টার।
আরো পড়ুনঃ ছয় দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ শুরু হলো আজ