পুলিশের তল্লাশী

কেরানীগঞ্জ থেকে রাজধানীতে ঢুকতে পুলিশের ব্যাপক তল্লাশী

কেরানীগঞ্জ

বিএনপি- আওয়ামীলীগসহ বেশ কয়েকটি দলের শুক্রবার দুপুরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেরানীগঞ্জ থেকে রাজধানীতে প্রবেশের তিনটি সেতুতেই তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে পুলিশ। কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকা, হাসনাবাদ এলাকা ও বসিলা এলাকায় রাজধানী মুখী বাস, মিনিবাস,প্রাইভেট কারসহ সব ধরনের যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করতে দেখা গেছে পুলিশকে।
শুক্রবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, প্রত্যেকটি বাসে উঠে এবং অন্যান্য যানবাহন থামিয়ে তল্লাশী ও জিঞ্জাসাবাদ করছে পুলিশ। এ সময় কোন যাত্রীকে সন্দেহ হলেই তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসপত্র চেক করা হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক যাত্রীদের মুঠোফোন ঘেটে দেখার পরে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সকাল থেকে চলমান পুলিশের এ তল্লাশী অভিযানে সন্দেহভাজন প্রায় শতাধিক ব্যাক্তিকে বিভিন্ন যানবাহন থেকে নামিয়ে জিঞ্জাসাবাদ করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যাক্তিকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তবে আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের শান্তি সমাবেশের ব্যানার ধারন করা গাড়িগুলো তল্লাশি ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

মো: মানিক নামে এক যাত্রীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আজকে ৩ টায় আমার ভাই কুয়েত থেকে দেশে ফিরছে, আমি আমার ভাইকে আনতে ২/৩ জন মিলে বিমান বন্দরে যাচ্ছি হায়েস গাড়ি নিয়ে। পুলিশ আমাদের গাড়ি থামিয়ে তল্লাশী করে, এরপরে কোন কারন ছাড়াই আমার মোবাইল দেখতে চায়। তারা আমার মোবাইলের গ্যালারিতে ঢুকে সব কিছু চেক করে। এই দেশে আমাদের ব্যাক্তিগত বলতে কি কিছু নাই ?
মো: সেলিম নামে অপর একজন জানান, আজকে শুক্রবার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে আমি একটু ঢাকায় যাচ্ছি, পুলিশ আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে জিঞ্জেস করছে আমি বিএনপির সমাবেশে যাচ্ছি কি না, আমার কল লিস্ট চেক করছে বিএনপির কোন নেতার সাথে আমার কথা হয়েছে কি না। তাদের এতো প্রশ্ন কেন ? আমরা কোথায় বসবাস করি যেখানে ব্যাক্তিগত গোপনীয়তা বলতে কিছু থাকে না ??

এদিকে শুক্রবার ভোর বেলা থেকেই পুলিশ বুড়িগঙ্গায় সমস্ত নৌকা পাড়াপাড় বন্ধ করে দেয় বলে যানা গেছে। মো: ইসহাক নামে এক ফল ব্যবসায়ী জানান, আমি বাদামতলীতে ফলের ব্যবসা করি, প্রতিদিন নৌকা দিয়ে নদী পাড়াপাড় হই। আজকে সকালে এসে দেখি নৌকা বন্ধ, যানতে পারলাম পুলিশ নিষেধ করে গেছে নৌকা চালাতে। জয়নাল নামে এক নৌকার মাঝি জানান, ভোর থেকেই আমাদের নৌকা চালাতে নিষেধ করে দিয়েছে পুলিশ। আমরা দিন আনি দিন খাই, আজকে সারাদিন ধরে বসা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর জানান, শুক্রবার দুপুরে সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন তৈরী করতে না পারে , তাই রাজধানীতে প্রবেশ মুখে সন্দেহভাজন যানবাহনগুলো তল্লাশী করা হচ্ছে। আজ সকালে বেশ কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা বললে তাদের কথা বার্তায় সন্দেহজনক মনে হলে , তাদেরকে আমরা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে অধিকতর জিঞ্জাসাবাদ করছি, জিঞ্জাসাবাদের পরে তাদের ছেড়ে দিবো। সঠিক সংখ্যাটা বলতে পারছি নাহ।

মোবাইল ফোন চেক করার বিষয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, কিছু যাত্রীদের কথা বার্তায় সন্দেহভাজন মনে হলে , আমরা তাদের মোবাইল ফোন চেক করে দেখেছি যে তারা রাষ্ট্রবোরোধী কর্মকান্ডে জড়িত কি না।

বুড়িগঙ্গায় নৌকা পাড়াপাড় বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিলো, আজকের সমাবেশকে কেন্দ্র করে অণেকে খেয়া যোগে বিষ্ফোরক জাতীয় দ্রব্য সমাবেশ স্থলে নিয়ে যেতে পারে। তাই আমরা নৌকা বন্ধ করে সবাইকে ব্রীজ দিয়ে পারাপার হতে বলছি, যাতে অনন্ত তল্লাশী করতে পারি, কেও কোন নাশকতার পরিকল্পনা করছে না। কেরানীগঞ্জ থেকে রাজধানীতে তিনটি প্রবেশ মুখে পুলিশের প্রায় ৩ শতাধিক কর্মী নিরাপত্তা দায়িত্বে নিয়োজিত আছে বলে আরো জানায় পুলিশের এ কর্মকর্তা ।

 

কেরানীগঞ্জের আলো

রো পড়ুন: জিনজিরায় সংঘর্ষ