রাসেল হত্যাকান্ড এর ৪৮ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
কেরানীগঞ্জের চরকালিগঞ্জ এলাকায় চাঁদাবাজির টাকার ভাগ বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা আলতাফ উদ্দিন রাব্বি ও তার সহযোগীরা মিলে রাতভর নির্যাতন করে রাসেলকে হত্যা করে। হত্যার ৪৮ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক কে বহিষ্কার করেছে।
গত বুধবার রাতে তাদের বন্ধু হাতে নিহত হন সাইফুল ইসলাম রাসেল (৩২)। এই হত্যাকান্ড এর ঘটনায় দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা মাললা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আলোচিত এই হত্যাকান্ড এর ঘটনায় প্রায় দুইদিন পেরিয়ে গেলেও আসামীদের গ্রেপ্কার করছেন না প্রশাসন। তাই হত্যকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় এখনো পর্যন্ত আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় পরিবার আতঙ্কে ভুগছে ।
নিহতের ছোট বোন নাজমা বলেন, হত্যাকারিরা ক্ষমতাসীন দলের লোক ও অঢেল অর্থের মালিক হওয়ায় সব ম্যানেজ করে নেয়ার চেষ্টা করছে। তাই মামলা করেও প্রতিনিয়তই ভয়ভিতির মধ্যে রয়েছেন তারা। তিনি আরো বলেন, পুলিশ পারবেনা তাদের গ্রেপ্তার করতে তাই সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। যেন অপরাধীদের সর্বোচ্চ শান্তি হয়।
নিহতের স্ত্রী মৌসুমি আক্তার সুমি জানায়, আমার পরিবার নিয়ে ভীতিকর অবস্থায় আছি। আসামীর আত্মীয়স্বজনরা বিভিন্ন মোবাইল ও বিভিন্ন মারফতে হুমকি দিচ্ছে। তিনি গণমাধ্যমে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান।
উল্যেখ্য, রাসেলের নির্যাতনের ভিডিও গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ভাইরাল হলে কেরানীগঞ্জ উপজেলাসহ সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। (ভিডিও) তে দেখা যায় স্বজনরা বলছে, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বাসের উদ্দিনের ছেলে আফতাব উদ্দিন রাব্বির নেতৃত্বে তেলঘাট এলাকার পারভীন টাওয়ারের নিচ তলায় টাকার ভাগ বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে। রাব্বিসহ যারা রাসেলকে হত্যা করে তারা হলেন, চর মীরেরবাগ বাস্তহারা এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন ঠান্ডু, কালিগঞ্জ পশ্চিমপাড়া আলমগীর বেপারীর ছেলে মো. সজিব ও ঠান্ডুর সহযোগী আমির হোসেন, চর মীরেরবাগ বাস্তহারা এলাকার বিএনপি নেতা খাইরুল ইসলামের ছেলে শিপন, কালিগঞ্জ পূর্বপাড়া হাসান মিয়ার ছেলে মাইকেলসহ ১৫/১৬ জন রাসেলকে আটকে রেখে সারারাত ধরে অমানবিক নির্যাতন চালায়। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে তারা জানান, অভিযুক্তরা ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেও ভয় পাচ্ছেন স্বজনরা।
এ বিষয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু জানান, এ ঘটনা পুরো বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে। আমরা দক্ষিন কেরানীগঞ্জ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক আফতাব উদ্দীন রাব্বি কে দল থেকে বহিষ্কার করেছি। এমন ঘটনার দায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নিবে না।
আসামী গ্রেপ্তারের বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম জানান, আসামীদের গ্রেপ্তারের করার জন্য আমাদের সকল টিম কাজ করছে। অপরাধীরা তাদের মোবাইল বন্ধ করে রাখায় গ্রেপ্তারের সময় লাগছে। প্রকাশে ঘুরে বেড়ানো বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কথা লোকে বলেতেই পারে।
আরো পড়ুনঃ কেরানীগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার নেতৃত্বে রাতভর পৈশাচিক নির্যাতন