ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির একাধিক সদস্যের পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা গেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে উক্ত সদস্যরা এবং সমিতির সভাপতি হাজী মো: আনোয়ার হোসেন। এ নিয়ে এলাকায় নানান রকম আলোচনা সমালোচনা শোনা যাচ্ছে।
জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকার পতনের পরে সমিতির তৎকালীন কার্য নির্বাহী পরিষদ গা ঢাকা দেয়। এতে করে সমিতির কার্যক্রম ব্যাহত হলে সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় একটি এ্যাডহক কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে ৯ সদস্যের পূর্ন কমিটি গঠন করা হয়। এ্যাডহক কমিটি গঠন না হওয়ায় তখন বিষয়টি নিয়ে নানান রকম আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়।
পরবর্তীতে নানান চরাই উতরাই পারি দিয়ে নতুন কমিটি গত ৪ মাস দায়িত্ব পালন করে আসছে। এর মধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে নতুন করে আবারো সামনে এসেছে একাধিক সদস্যের পদত্যাগের গুঞ্জন। এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে নানা রকমের আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালিগঞ্জ এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন বিএনপি নেতা ও একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানান, ৫ আগষ্টের পরবর্তী প্রেক্ষাপটে সবাই ভেবেছিলো গার্মেন্টস পল্লীতে নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচন না হয়ে সিলেকশনের মাধ্যমে যে কমিটি দেওয়া হয়েছে তাতে করে অনেকেই অসোন্তষ প্রকাশ করেছে। এমনকি কমিটিতে যারা রয়েছে তাদের নিজেদের মধ্যেও মিল নেই।
অনেক বিষয়ে এখানে একক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সবার সাথে পরামর্শ করা ছাড়াই যে যার মতো করে কাজ করে ফেলার অভিযোগ রয়েছে। এ কারনে ৪ মাস না যেতেই কমিটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। খোদ কমিটির ভেতরেই অনেকেই চাইছে নির্বাচন। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি দেওয়ার দাবী জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী সমিতির একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে এবং অনুসন্ধান করে জানা যায়, সমিতির সাধারন সম্পাদক মো: সোনা মিয়া, ক্যাশিয়ার পাভেল মোল্লাসহ মো: রেজাউল,মো: কানন, ও মো: মোস্তাক সমিতির প্রতি অনাস্থা এনে পদত্যাগ করে। তবে পদত্যাগ পত্র জমা না নিয়ে ঐ দিন সকলের সাথে আলোচনা করে বিবাদ মিটিয়ে ফেলে কমিটির বাকি সদস্যরা। এবং বিষয়টি কৌশলে ধামা চাপা দেয়া হয়।
পদত্যাগের বিষয়ে কমিটির ঐ ৫ সদস্যের সাথে কথা হলে কেরানীগঞ্জের আলোকে বিষয়টি মিথ্যা বলে জানান তারা। মোস্তাক আহমেদ বলেন, এটা একটা গুজব। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এসব তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আরেক সদস্য কানন জানান, পদত্যাগের বিষয়টা সম্পূর্ণ গুজব। এক শ্রেণীর লোক আমাদের সাথে গেম খেলেছে। কোষাধ্যক্ষ পারভেজ মোল্লা (পাভেল) বলেন, মালিক সমিতির এই কমিটি পূর্বের চাইতে অনেক বেশি গুন শক্তিশালী এবং এই কমিটির প্রত্যেকটা সদস্য ব্যবসায়ীসহ সকলের বিপদে আপদে নিবেদিত প্রাণ। একটা কুচক্রী মহল এই কমিটির সদস্যদের সুন্দর কার্যকলাপে ব্যাঘাত ঘটাতে এসব পদত্যাগের মতো গুজব ছড়াচ্ছে। সমিতির যাদের নামে পদত্যাগের কথা বলা হচ্ছে তারা কেউই আসলে পদত্যাগ করেনি, এবং সকলে সুন্দর ভাবে নিজ জায়গা থেকে নিজ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এসব সাজানো নাটকের আমি তীব্র নিন্দা জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির বর্তমান সভাপতি হাজী আনোয়ার বলেন, সমিতির কোনো সদস্য পদত্যাগ করে থাকলে সেক্ষেত্রে সবার প্রথম আমি সভাপতির জানার ছিল। আপনারা জানেন স্বৈরাচার সরকার ও তার দোসরদের পলায়নের পর আমরা সমিতির দায়িত্বে আসার পর থেকেই পুরো গার্মেন্ট পল্লি এলাকা শৃঙ্খলার মধ্যে চলে এসেছে। আগে এখানে ফুট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে চাঁদাবাজি হতো, তবে বর্তমানে এসব সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ আছে। তিনি আরও বলেন, একটি কুচক্রী মহল আমাদের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এসব পাঁয়তারা করছে বলে আমার মনে হয়।