বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া ওয়াটার বাস উদ্ধার ; তীরে স্বজনদের আহাজারি

কেরানীগঞ্জ শুভাড্যা

বুড়িগঙ্গা নদীর সদরঘাট এলাকায় রবিবার রাতে ওয়াটার বাস ডুবির ঘটনায় সোমবার সকালে ওয়াটার বাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ১৭ জুলাই দীর্ঘ ১২ ঘন্টা চেষ্টার পরে সকাল সাড়ে আট টার দিকে ওয়াটার বাসটি তীরে টেনে তুলা হয়।

ওয়াটার বাসটি উদ্ধার অভিযানে সোমবার সকাল সাড়ে ৬ টায় যোগ দেয় বিআইডব্লিউটির উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম। এর আগে একটি লঞ্চ দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে পোস্তগোলা ব্রীজ পার হবার সময় ব্রীজের সাথে সংঘর্ষের কারনে রুস্তম এবার আর পোস্তগোলা ব্রিজ পার হয় নি। ওয়াটার বাসটি ডুবন্ত অবস্থায় পোস্তগোলা ব্রীজের অপর পারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দীর্ঘ ২ ঘন্টা চেষ্টা করে ওয়াটার বাসটি তীরে টেনে নিয়ে আশে রুস্তম। তীরে আনার পরে ওয়াটার বাসটিতে কোন মৃতদেহ পাওয়া যায় নি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা সোমবার সকালে ঘটনা স্থল পরিদর্শনে এসে বলেন, ডুবে যাওয়া বাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকালকে রাতে যে ৮ জন উদ্ধার করা হয়েছে  এর পরে আমরা আর কাউকে পাই নি।

এদিকে ওয়াটার বাস ডুবির ঘটনায় ঘাতক বাল্ক হেডের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন নৌ পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বাল্ক হেডের মাষ্টার শরিফুল ইসলাম (৩৫), চালক আনসার (৩৭), সুকানী সজিব সরদার, লষ্কর সিয়াম (২০) ও মো: সফিউল গাজী (২২) এবং মাসুদ মুন্সি (৪৮)। এ ঘটনায় দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় নৌ পুলিশের ঢাকা বিভাগের এ এসপি আবু মো: দিলওয়ার হাসান ইনাম।

সোমবার সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় ঘটনাস্থলের আশে পাশে ভাসছে যাত্রীদের ব্যাগ,  নারীদের পার্স ব্যাগ,জুতোসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র। তীরে কয়েকজনকে দেখা গেলো স্বজনদের অপেক্ষায় বসে থাকতে।

নুহিন (২২) নামে এক যুবককে খুজছে তার নানী শামসুন্নাহার। শামসুন্নাহার জানান, ও ওয়াটার বাসের ভিতেরেই ছিলো। ওর সাথে আমাদের শেষ কথা হয়েছে ও যখন ওয়াটার বাসে উঠে। এর পরে ওর আর খবর নাই। এখন যদি অন্তত ওর লাশটা যদি পেতাম মাটি দিতে পারতাম, একটু শান্তি পেতাম।

 

বিআইডব্লিউ ডুবুরীরা জানান, আজকে জাহাজ উদ্ধার করেছি কোন ডেড বডি পাই নি। যে জায়গায় ডুবেছে সেখানেও সার্চ করেছি কোন বডি পাই নাই আমরা। এখন বাহিরে যদি পরে থাকে তলিয়ে গেছে, সেটা তো আর আমরা পাবো না। তবে ডেড বডি যদি আরো থাকে তাহলে পানির প্রেশারে ভেসে উঠবে।

সদরঘাট ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ আব্দুল মালেক জানান, সকাল সাড়ে আটটার দিকে ওয়াটার বাসটি টেনে পাড়ে তোলার পর সেখানে কোন মরদহ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া নিখোঁজের কোন তথ্য না থাকায় উদ্ধার অভিযান আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে  কোথাও কোন লাশ ভেসে উঠতে পারে এই বিবেচনায় নদীতে টহল অব্যাহত আছে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওয়াটার বাস ডুবিতে মৃতদের পরিবারকে ২৫ হাজার ও জীবিত উদ্ধারকৃতদের ১৫ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষনা দেয়া হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই