ঈদের জন্য প্রস্তুত ১২৬ লঞ্চ, অগ্রীম টিকিটে যাত্রীদের সাড়া নেই

কেরানীগঞ্জ

প্রতিবেদকঃ মোঃ রাহাত হোসেন

পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন দিন। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে রাজধানীর ছেড়ে যাবে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। ঘরমুখী এসব মানুষের যাতায়াত নিশ্চিত করতে সদরঘাট টার্মিনালে ১২৬টি লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে এসব বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে।

অপরদিকে লঞ্চ মালিকদের দাবি, সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও আগের মতো সদরঘাটে জমজমাট আর যাত্রীর চাপ নেই। পদ্মা সেতু এর প্রভাব পড়েছে নৌপথে। এমনকি লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বুকিংয়েও তেমন কোনো সাড়া পাননি বলে জানান তারা।

আজ শনিবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে তেমন কোনো যাত্রী চাপ দেখা যায়নি। এমনকি টার্মিনালে নির্ধারিত অগ্রিম টিকিট বুকিং কাউন্টার গুলোও ফাঁকা দেখা যাচ্ছে ।

নৌপথে যাতায়াতকারীরা বলছেন, পদ্মা সেতু হওয়ার আগে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল এই লঞ্চ ভ্রমন। কিন্তু এখন সবাই পদ্মা সেতু দিয়ে চলে যাচ্ছেন বাড়ি। তবে স্বস্তির যাতায়াতের জন্য এখনো অনেকের পছন্দের শীর্ষে লঞ্চ ভ্রমন।

বরিশাল স্বরুপকাঠি রুটের যাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার স্ত্রী, দুই সন্তানকে লঞ্চে তুলে দিয়ে গেলাম। সড়কপথের চেয়ে লঞ্চে যাতায়াত অনেক নিরাপদ ও আরামদায়ক। তাই আমি তাদের লঞ্চে তুলে দিয়ে গেলাম। আমি ঢাকায় ঈদ করে পরের দিন চলে যাব।

চাঁদপুর গামী ঈগল-৩ লঞ্চের যাত্রী শাকিল মিয়া বলেন, ২৭ রমজানে লঞ্চ এত ফাঁকা পাব ভাবতে পারিনি। অন্যান্য বছর লঞ্চে এসে ডেকে একটু জায়গা নেওয়ার জন্য ভোরে এসে বসে থাকতে হতো। অথচ এবার বিকেল হয়ে গেলেও লঞ্চে ডেকের অর্ধেক এখনো খালি রয়েছে। আশা করছি, এবার নিরাপদে ও স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারব।

লঞ্চ মালিক সমিতির প্রিন্স আওলাদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অন্যান্য বছর এই সময়টায় দক্ষিণাঞ্চলগামী মানুষের ভিড় লেগে থাকত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। ২৭ রমজানের পর টার্মিনালের পন্টুনে তিল ধারণে ঠাঁই থাকত না, তবে গত দুই বছর ধরে চিত্র ভিন্ন। সদরঘাটে যাত্রী চাপ একেবারেই কমে গেছে।

এবারের চিত্র তো আরও ভয়াবহ। অন্যান্য বছর এমন সময় লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের ৯০ শতাংশ বুকিং হয়ে যেত। আর এবার লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের প্রতি যাত্রীদের কোনো সাড়া নেই। এবার হয়তো দিনে এসে দিনেই লঞ্চের কেবিন নেওয়া যাবে এমন পরিস্হিতি।

শুক্রবার পরির্দশনে এসে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে সদরঘাটের চিত্র পাল্টে গেছে। যাত্রী চাপ আগের তুলনায় কম হলেও, আমাদের কোনো নৌ-রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ নেই। ছোট ছোট রুটগুলোতেও নিয়মিত লঞ্চ চলাচল করছে। প্রতিনিয়ত ঢাকা নদী বন্দর থেকে ৭৬টি লঞ্চ চলাচল করে। তবে আগামী ৬ এপ্রিল থেকে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করবে। ইতিমধ্যে ১২৬টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিরাপদ যাত্রী সেবার লক্ষ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।