রিফাত হোসেনঃ
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী সরকার প্রধান শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই সারা দেশ জুড়ে ঘটে চলেছে লুটপাত, ছিনতাই ও চুরির ঘটনা। এবার সাইনবোর্ড ও গেইট চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হলো দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: সালাউদ্দিনের এর ভাই ফারুক ওরফে কালা ফারুকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঢাকার দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পূর্বপাড়া চিতখোলা এলাকার ইসলামিয়া মডেল টাউন নামক এলাকায়
জানা যায়, ইসলামিয়া মডেল টাউন নামক এই জমির প্রবেশ স্থলে গত দুই বছর আগে প্রজেক্টের নামে একটি ষ্টীল সাইনবোর্ড গেইট স্থাপন করা হয়। তবে গত ৩০ আগষ্ট (শুক্রবার) জুম্মার নামাজের সময় এই গেটটি কেটে চুরি করে নিয়ে যায় স্থানীয় দুর্বৃত্তরা।
খোজ নিয়ে জানা যায়, স্টিলের খুঁটি থেকে লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে বিশাল ওজনের এই সাইনবোর্ড গেইটটি খুলে সরিয়ে নিয়ে যায় স্থাণীয় ফারুক ওরফে কালা ফারুক নামে এক ব্যাক্তি। শুক্রবার দুপুরে প্রযেক্টের পাশে থাকা একটি কারখানা থেকে স্টিল কাটার মেশিন ও ইলেকট্রিক লাইন নেন বলে জানা যায়।
ঐ কারখানার কর্মচারী হৃদয় জানান, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২ টা দিকে শুভাঢ্যা পূর্বপাড়া বাথান বাড়ি এলাকার ফারুক ও তার সাথে আরো পাঁচছয় জন এসে পাঁচ মিনিটের জন্য ইলেকট্রিক সাপ্লাই চান।
হৃদয় সেটা দিতে অসংকোচ জানালে অন্য আরেকজনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে সংযোগটি নেয় ফারুক
ইসলামিয়া মডেল টাউনের সে সাইনবোর্ড গেইট টি কারখানার ঠিক বরাবর হলেও শুক্রবার নামাজের সময় ঘটনাটি ঘটার কারনে, কারাখানার কেও এ বিষয়টি নিয়ে অবগত নয় বলে জানা যায়।
চুরি যাওয়া সাইনবোর্ড গেটের ব্যাপারে চাঁদনী আক্তার বলেন, এই জমিটি মূলত আমার শ্বশুর আব্দুর রব মাতুব্বরের, তিনি এখন রিটায়ার্ড। আমার শ্বশুরের অনুপস্থিতিতে গত ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে শুভাঢ্যা পূর্ব পাড়ার স্থানীয় সন্ত্রাসী কালা ফারুক ও তার ভাই বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আমাদের কাছে চাঁদা চায়। তারা দুই লাখ টাকা চাঁদা চাইলে, দিতে না পারায় আমাদের জমির ইটের তৈরি করা প্রাচীর ভেঙে ফেলে। আমরা তাদের বারন করলেও তারা আমাদের সামনেই আমাদের দেয়াল ভেঙে ফেলতে শুরু করে। এই মর্মে তৎকালীন সময় আমরা থানায় জিডি করলেও কোন আইনানুগ সহায়তা পাইনি। এরপর থেকেই তারা বিভিন্ন সময় আমাদের জমি দখল করার উদ্দেশ্যে ভয় ভিতি দেখাতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা পুনরায় আমাদের নিকট গেলো ২৯ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) দুই লাখ টাকা চাঁদা চাইলে আমরা দিতে অপরগতা প্রকাশ করি। এরই ধারাবাহিকতায় ঐ দিনই সন্ত্রাসী কালা ফারুক ও সালাউদ্দিন আমাদের জায়গায় নির্মাণাধীন স্টিলের গেট কেটে নিয়ে যায়, এবং বলতে থাকে চাঁদা না দিলে বাকি স্টিল ও বাউন্ডারি যাই পাবে তাই, কেটে নিয়ে যাবে, এবং জমি থেকে আমাদের বেদখল করবে। এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা থানায় গিয়েছি, এতে থানা আমাদেরকে কোন সহযোগিতা না করায় আমরা এখন অত্যন্ত বিপদগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছি। যদি এদেরকে থামানো না যায়, হয়তো অচিরেই বিএনপির রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে তারা আমাদের জমি থেকে বেদখল করে ফেলবে । আমরা এই অন্যায়ের সুষ্ঠ বিচার চাই।
ফারুক ও তার এই চক্র এর আগেও বিভিন্ন সময় চুরি ছিনতাই এর ঘটনায় জড়িত থাকার কথা এলাকাবাসীর মুখ থেকে জানা যায়। এর আগেও ফারুক ঝিলমিল আবাসন প্রকল্পের সীমানার টিন চুরি করে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন বলে জানা যায়।
চুরির বিষয়ে অভিযুক্ত ফারুকের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে তার বড় ভাই ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন মিয়ার যোগাযোগ করা হলে তিনি চাঁদা দাবির অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। ইসলামিয়া মডেল টাউনের গেট চুরির সাথে তার ভাই ফারুকের সম্পৃক্ততার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ভায়ের নামে যে অভিযোগ এসেছে সেটি প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে তাকে।