গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার গন অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। পতনের পর বিগত দেড় যুগের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে উজ্জীবিত অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। অনেক বছর পর কারামুক্ত হয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য গেছেন দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। একের পর এক মামলা থেকে খালাস পেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।
দলটির নেতাকর্মীরাও রাজনৈতিক মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসছেন। সব মিলিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে।
বিএনপির এখন হাজার হাজার নেতাকর্মীর দেখা মিললেও ১/১১ এর পর থেকে গত ১ যুগে দলের বিপদে কর্মীদের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বেশ কয়েকজন নেতা। বিএনপির কেন্দ্রীয় যুব দলের সহ সভাপতি রেজাউল করিম পল তাদের মধ্যে একজন।
দেশের রাজনীতির ক্রান্তিলগ্নে ও বিএনপির দুঃসময়ে মাঠে সক্রিয় ছিলেন পল। গত ১ যুগে আওয়ামী সরকারের নানা নির্যাতন নিপিড়ন সহ্য করে দলের বিভিন্ন দিবস, সভা-সমাবেশও করেছেন নেতাকর্মীদের নিয়ে। যে কোন নেতা কর্মীর বিপদে, দলের প্রয়োজনে শত প্রতিকূলতা থাকলেও সব সময় সোচ্চার ছিলেন পল। এবার এই নেতাকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন কেরানীগঞ্জের বিএনপির নির্যাতিত নেতাকর্মীরা।
দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত ১৬ বছর দলের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। এসবের মধ্যে পাশে থেকে রেজাউল কবির পল দিয়েছেন সাহস। বহু কারাবন্দী নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের দায়িত্বসহ দলের নেতাকর্মীদের কারামুক্তির ব্যবস্থাও করেছেন তিনি।পলের কর্মী সমর্থকদের আশা দল থাকে নিরাশ করবে না দুঃসময়ের এই নেতাকে। আগামীতে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবেও দেখতে চান তাকে।
২০১২ সালে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন পল, এরপরে ২০১৩ সালেও গুলিবিদ্ধ হলে গুরুতর আহত পলকে দেখতে হাসপাতালে যান বেগম জিয়া। এরপর ২০১৮ নির্বাচনের আগে পুলিশ ও আওয়ামী নেতা কর্মীরা কয়েক দফা হামলা করে পলের ওপর।। সর্বশেষ ২০২৩ সালে রেজাউল কবির পলকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে গুমের চেষ্টা করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে পল সমর্থকদের আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
নেতা কর্মীদের অভিযোগ বিগত ১৬ বছর ধরে এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন অনেক নেতা। অনেকে আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে আপোষ করে ব্যবসা-বানিজ্যে নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। বিএনপির পরিচয় পর্যন্ত দেননি। ছাত্রদল, যুবদলের নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলা নিয়ে আদালত পাড়ায় ঘুরেছেন, খবর পর্যন্ত নেননি কেউ। কেরানীগঞ্জে বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। অনেক বিএনপি নেতা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে এখন টাকার বিনিময়ে বিএনপিতে জায়গা দিচ্ছেন। সেই দিক দিয়ে, পুরো বেতিক্রম রেজাউল কবির পল।
দলের সুসময়ে এখন যখন আশেপাশের অনেক নেতা আওয়ামীলীগের সাথে আতাত করতে নানা সুযোগ সুবিধা নিতে ব্যস্ত, সেদিকে পল তারেক রহমানের নির্দেশে সমগ্র বাংলাদেশ ভ্রমন করছে দলকে চাঙা করার কাজে।
নানানা বিষয়ে পলের সাথে কথা হয় কেরানীগঞ্জের আলোর। কেরানীগঞ্জের আলোকে পল বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের মেয়াদ শেষে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে অপশক্তিরা ষড়যন্ত্র শুরু করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়। ২০০৮ সালে প্রহসনের নির্বাচনে দেশের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে জোর করে নির্বাচনে হারিয়ে দেওয়া হয়।
অপশক্তির কাছে হেরে যায় গণতন্ত্র, এরপর থেকে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের উপর চালানো হয় জেল জুলুম নির্যাতন দেশের স্বপ্নদ্রস্টা তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো কে পাঠানো হয় নির্বাসনে। গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে করা হয় কারাবন্দি।স্বৈরাচারী ও ফেসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার তিলে-তিলে শেষ করতে চেয়ে ছিল জিয়া পরিবারকে।
পল আরো বলেন, বিগত ১৬ বছরে দেশে কোন সুষ্ট নির্বাচন হয়নি। জিয়া পরিবারের সাথে সাথে সর্বত্র বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মী হত্যা গুম করা হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে কারগারে মেরে ফেলতে চেয়েছে। উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। সর্বশেষ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনা।
রেজাউল করিম পল আরো বলেন দীর্ঘদিন ধরে শহীদ জিয়ার আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাজনীতি করেছি। আমার কাছে পদের চেয়ে দল বড়। বিএনপি আমার পরিবার, রাষ্ট্র নায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের সর্ব্বোচ্চ সম্মানে নিয়ে যাওয়াটাই এখন আমার ও আমার কর্মীদের লক্ষ্য।