কেরানীগঞ্জে টিসিবি খাবার বিক্রিতে বিএনপি নেতাদের বাধা

আমার ইউনিয়ন কেরানীগঞ্জ জাতীয় রাজনীতি শুভাড্যা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের পারগেন্ডারিয়া এলাকায় সরকারী টিসিবি পন্য বিক্রিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের কার্য সহকারী রোকেয়া মাহমুদ কবিতা জানান, আজ দুপুরে পারগেন্ডারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিসিবি পন্য বিতরন করতে আসলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধার সম্মুখিন হন তিনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, টিসিবি পন্য নেয়ার জন্য সরকার থেকে সেবা গ্রহীতাদের দেয়া স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড গুলো সচল করার জন্য আজকে সে কার্ড জমা নিয়ে আমরা পন্য দিচ্ছিলাম। কিন্তু তখন স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতা এখানে এসে সেবা গ্রহীতাদের ভুল বুঝিয়ে উল্কিয়ে দেন যে আমরা আওয়ামী লীগের দালাল এবং আমরা এই কার্ডগুলো নিয়ে গেলে আর ফেরত দিবো না। নেতাকর্মীদের উস্কানীমূলক কথায় সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দেখা দিলে তারা আমার এবং ডিলারদের সাথে মারমুখী আচরণ করে। অনেক চেষ্টার মাধ্যমে আমি যখনই সাধারণ মানুষদের বুঝাচ্ছিলাম যে আমি সরকারী কাজ করতে এসেছি প্রশাসকের নির্দেশনায় তখন বিএনপির বিভিন্ন পরিচয় দেয়া নেতাকর্মীদের মাঝে থেকে কয়েকজন এসে আমার সাথে অসদ ও মারমুখী আচরণ শুরু করে। বিষয়টি আমি শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে জানানোর পরেও তিনি কোন তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয় নি। বারবার বলার পরেও তিনি গ্রাম পুলিশ অন্ধি পাঠাতে প্রায় তিন ঘন্টা দেরী করে।

আঃ সোবহান নামে এক সেবা গ্রহীতা জানান, দুপুর দুইটার দিকে আমি টিসিবির মাল নিতে এসেছি। আসার পর থেকে এখানের মানুষজন বলছে যে আমাদের কার্ড নিয়ে গিয়ে আজকে মাল দিয়েই কার্ড বাতিল করে দিবে। বাতিল করে দিবে কে বলছে জানতে চাইলে তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের দিকে ইশারা করে বলেন, ‘এখানে যারা আছে তারাই তো বলছে’।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুভাঢ্যা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা পরিচয়দানকারী আনিস, শুভাঢ্যা ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক পরিচয়দানকারী আফজাল মাহমুদ সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী টিসিবি পন্য দেয়ার সময় পন্য কিনতে আসা সেবা গ্রহীতাদের উদ্দেশ্যে “কার্ড জমা দিয়ে কেউ মাল নিবেন না, আর যদি নেন তাহলে পরে আর আমাদের কাছে আসতে পারবেন না, তারা কার্ড নিয়ে যদি ফেরত না দেয় তাহলে আমাদের পিছে পিছে ঘুরতে পারবেন না” বলতে দেখা যায়। এমন কথা বলার কারণ জানতে আফজাল মাহমুদকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এর আগে এই স্মার্ট কার্ড গুলো আমরা বিতরন করেছি। আমাদের নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে, মোবাইলের টাকা খরচ করে আমরা কষ্ট করে বিতরন করেছি। এখন উপজেলা থেকে সে এসে বলছে কার্ডের কাজ বাকি আছে, তাই জমা দিতে হবে। কিন্তু জমা দেয়ার পর যদি ফেরত না দেয় তাহলে তো এই মানুষ গুলো আমাদের পিছনে পিছনে ঘুরবে, আমরা তখন কি করবো।। কার্ড আপনাদের বিতরন কেন করতে হয়েছে জানতে চাইলে উপস্থিতরা বিএনপি নেতাকর্মী পরিচয়ে বলেন, ওয়ার্ড মেম্বার না থাকার কারণে আমরা দিয়েছি, আর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সচিব দিতে গেলে মানুষের মাঝে হইচই আর বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় তাই আমরা সহযোগিতা করেছি।

শুভাঢ্যা ইউনিয়নের সচিব খোরশেদ আলম সাগরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম নির্দেশনা ছিল এই কার্ডগুলো যার কার্ড সে আসবে এরপর সে ফিঙ্গার ও মবাইল নাম্বার দিয়ে একটিভ করবে এরপর মাল দেয়া হবে। স্মার্ট কার্ড গুলো যেহেতু বিতরন হয়ে গেছে তাই ডিলার দের বলা হয়েছিল স্মার্ট কার্ড গুলো আপনারা রেখে মাল দিবেন এবং আগামীবার এক্টীভ করে আবার মাল দিবেন। এটা নিয়েই ঝামেলা হয়েছে একটু। বিএনপি নেতাকর্মীদের দিয়ে কার্ড বিতরণে ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন জয়েন করেছি। আমি আসার পর থেকেই দেখছি যে এখানে মেম্বাররা না থাকার কারণে বিএনপি নেতাকর্মীরাই অফিস করে। তারা আমাদেরকে আমাদের মত করে কাজও করতে দিচ্ছেনা আবার এখন যেমনটি শুনছি তারা বিশৃঙ্খলারও সৃষ্টি করছে।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রাসেদ খান বলেন, আমি অন্য একটি কাজে দূরে থাকায় সেখানে আমার প্রতিনিধি গিয়েছিল। আমার প্রতিনিধির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি ঐখানে বিশঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল। আগামী কাল আমি অফিসে গিয়ে ডিলারদের সাথেও সরাসরি কথা বলে বিষয়টা বিস্তারিত জানতে পারবো।