যাত্রীসেবার মান বাড়াতে কাঠামোগত সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চার অঞ্চলে ভাগ হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে । একইসঙ্গে বিদ্যমান ৪টি বিভাগ থেকে বিস্তত করে আটটি বিভাগ করা হবে। বর্তমানে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের অধীনে রেলওয়ের চারটি বিভাগ রয়েছে।
গত ৫ ডিসেম্বর রেলওয়ের এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে এর মহাপরিচালক কামরুল আহসান।
সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের বিদ্যমান পশ্চিমাঞ্চল রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা নিয়ে গঠিত। এ অঞ্চলকে ভেঙে খুলনা ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন “দক্ষিণাঞ্চল” প্রতিষ্ঠা করা হবে। নতুন এ অঞ্চলের অধীনে যশোর ও ফরিদপুর দুটি বিভাগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ নিয়ে গঠিত বর্তমান পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের ঢাকা ও ময়মনসিংহ আলাদা করে “মধ্যাঞ্চল” নামে নতুন অঞ্চল গঠিত হবে। এ অঞ্চলের অধীনে ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগ করা হবে। এ সিদ্ধান্তের আলোকে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে থেকে ঢাকা বিভাগ বাদ পড়ায় নতুন পরিচালন বিভাগ হিসেবে সিলেটকে প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া রাজশাহী ও রংপুর নিয়ে গঠিত রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পরিচালন পরিধির এলাকা কমলেও বিদ্যমান পরিচালন বিভাগ পাকশী ও লালমনিরহাট অপরিবর্তিত থাকছে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, নতুনভাবে প্রস্তাবিত বিভাগসমূহের অধিক্ষেত্র, জনবলসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পার্সোনেল শাখার মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে দ্রুত পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন কাঠামোতে চার অঞ্চলের প্রধান হবেন চারজন মহাব্যবস্থাপক। আর পরিচালন বিভাগগুলোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একজন করে বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক। একইভাবে রেলের পুরো জনবল কাঠামোকে ঢেলে সাজানো হবে। ট্রেন পরিচালনাগত সিদ্ধান্তগুলো নেবে অঞ্চল ও বিভাগ। আর নীতিনির্ধারণী বিষয়গুলো দেখবে রেলের সদর দপ্তর।
এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীসেবাসহ রেল নেটওয়ার্ক বাড়াতেই ৪ অঞ্চলে ভাগ করা হচ্ছে রেলওয়েকে। ট্রেন পরিচালনা ও সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে এসব বিভাগ ও অঞ্চল। রেলওয়ের জনবল কাঠামো পুনর্বিন্যাসের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।”
সারাদেশে এখন রেলপথ আছে ৩,০৯৩.৩৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলে রেলপথ আছে ১,৩৩৩.৯৩ কিলোমিটার। আর পশ্চিমাঞ্চলে ১,৭৫৯.৪৫ কিলোমিটার। রেলওয়ের বিদ্যমান মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৪,৭০০ কিলোমিটার।