ঢাকার কেরানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুলিতে নিহত শহীদ ফয়জুল ইসলাম রাজনের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের কর্মী ও মামলার ২ নম্বর আসামি আনোয়ার হোসেন (৫৭) কে গ্রেপ্তার করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার আনোয়ার কেরানীগঞ্জ মডেল থানা শ্রমিকদলের সদস্য।
শনিবার রাতে শহীদ রাজনের মা মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাতজনকে এজাহারভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতানামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে শনিবার রাতেই কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন তারানগর ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকা থেকে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরমানুল হক ডাবলু বলেন, শহীদ রাজনের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জুলাই ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে মিরপুর ১০ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ফয়জুল ইসলাম। পরবর্তী সময়ে কেরানীগঞ্জের বাহেরচর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে ওই কবরের চারপাশে সীমানাদেয়াল নির্মাণের কাজ চলছিল।
ফয়জুলের বড় ভাই মোহাম্মদ রাজু বলেন, ভাইয়ের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় গত শনিবার রাতে মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ আনোয়ার নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমাদের দাবি আনোয়ারের সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক। যাতে আর কেউ শহীদদের এভাবে অসম্মান করতে না পারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেরানীগঞ্জ মডেল থানার আহ্বায়ক শাফায়েত ঢালী বলেন, শহীদ রাজনের (ফয়জুল ইসলাম) কবর ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার আনোয়ার কেরানীগঞ্জ মডেল থানা শ্রমিকদলের সক্রিয় কর্মী। তার সাথে আরও যারা জড়িত ছিল তাঁদের সবাইকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করতে হবে।
এদিকে কবর ভাঙচুরের ঘটনায় আজ রোববার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া। পরিদর্শন শেষে তিনি ভাঙচুর করা কবর অতিসত্বর মেরামত করার নির্দেশ দেন।
এছাড়াও আরো পরিদর্শন করেন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে হারুন অর রশিদ, মো. মেহেদি। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতা রিফাত রসিদ, রাসেল, ইমরান হোসেন ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় নাগরিক কমিটির-মামুন, জসিম, জাবেদ ।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা আহবায়ক আল আমীন মিনহাজ এবং মডেল থানার আহবায়ক সাফায়েত হোসেন ঢালি সহ আরো অনেকে। এসময় নেতৃবৃন্দ শহীদ রাজন ভাইয়ের কবর ভেঙে ফেলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার দুপুরে দিকে তারানগর ইউনিয়নের উত্তর বাহেরচর এলাকার বাহেরচর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে শহীদ ফয়জুল ইসলাম ওরফে রাজনের কবর ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে গত ১৫ মার্চ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর করেরগাঁও এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শহীদ সায়েম হোসেনের কবরও ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।
আরো পড়ুনঃ কেরানীগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শহীদ রাজনের কবর ভাঙচুর