গার্মেন্টস পল্লি

ঈদকে কেন্দ্র করে কাঙ্ক্ষিত বিক্রি নেই কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লীতে

আগানগর আমার ইউনিয়ন কেরানীগঞ্জ

প্রতিবেদকঃ মোঃ রাহাত হোসেন

দেশের সর্ববৃহৎ তৈরি পোশাক কারখানা হচ্ছে কেরানীগঞ্জ গামেন্টস পল্লী। আপনারা সবাই হয়তো জানেন এখান থেকেই বিশ্বের সব দেশে পোশাক আমদানী-রফতানী করা হয়।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন কেরানীগঞ্জের পোশাক শ্রমিকরা কালীগঞ্জের প্রতিটি কারখানায় চলছে বাহারি রং ও ডিজাইনের আধুনিক রুচি সম্মত পোশাক তৈরির কাজ যা দেশের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ জোগান দেওয়া হয় এখান থেকে। তবে কাজের চাপ বাড়লেও বেচা বিক্রি এখনো জমে ওঠেনি।

ঘুরে দেখলাম সেলাই মেশিনের শব্দ বলে দিচ্ছে পোশাক তৈরির ধুম লেগেছে কারখানাগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় দশ হাজার কারখানায় ৫০ হাজার শ্রমিক পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবছরের তুলনায় এই বছর বিদ্যুৎ কম যাওয়ার কারনে  দেশীয় পোশাকে তৈরী উৎপাদন বেড়েছে পোশাক শিল্পে  খরচ ও কমেছে অনেক। প্রতিবছরের তুলনায় এ বছর দেশীয় পোশাক বেচা-কেনাও হচ্ছে হরদম ভাবে। অপরদিকে যারা বিদেশ থেকে পোশাক আমদানী করে বিক্রি করতেন তাদের অনেকেই এই বছর ব্যবসার পরিস্থিতি খারাপ বলে জানান।

গার্মেন্টস পল্লী
ছবি তুষার আবদুল্লাহ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি হয় এখানে মানসম্মত ও রুচি শিল পোশাক শ্রমিকদের দক্ষ হাতে তৈরি হচ্ছে সকল বয়সী ছেলেদের প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, পায়জামা, কাতুয়া ও বাবা স্যুট আর মেয়েদের জন্য তৈরি হচ্ছে টপস, ওয়ান পিস, বিভিন্ন রঙের কামিজ এবং বোরকা কারখানাগুলোতে কেউ কাপড় কাটছে কেউ সেলাই করছে, কেউবা সুতা কাটা সহ বোতাম লাগানোতে ব্যস্ত কেউবা ইস্ত্রী করে প্যাকেজিং করে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন শোরুমগুলোতে কারিগররেরা বলছেন দিনরাত ২৪ ঘণ্টা খেয়ে না খেয়ে পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। দোকানদাররা বলেন আমরা সারা বছর রমজান মাসের অপেক্ষায় থাকি সারা বছর পোশাক তৈরি করে ঈদুল ফিতরের জন্য মজুদ করে রাখি।

রোজার মাসে বিক্রি করার জন্য তারা যেই পরিমাণ মাল মজুদ করে রেখেছে সে হিসাবে বর্তমানে মার্কেটে কোন বেচাকেনা নেই । তারা এটাও জানান যে শবে-বরাতের পর থেকে বেচা-কেনা ভালোই ছিলো কিন্তু প্রথম রোজা থেকে ঠিকমতো কাস্টমার  দের দেখা যাচ্ছে না।

পূর্ব আগানগরের আলম মার্কেট, জিলা পরিষদ মার্কেট, চর কালীগঞ্জ মার্কেট, নুরু মার্কেট, পশ্চিম আগানগরের তানাকা মার্কেট, শহীদুল আলম মার্কেট, খাজা মার্কেট, এস আর শপিং মল  মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের পোশাকের চাহিদার ৭০ শতাংশই  কেরানীগঞ্জ থেকে সরবরাহ করা হয়। এখানকার তৈরি পোশাকের মান ভালো ও দাম কম থাকায় প্রতিনিয়ত চাহিদাও বাড়ছে।

যুবরাজ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন,  গত বছরের তুলনায় আমাদের এই বছর পোশাকে ভ্যাট টেক্স বেড়েছে। যার কারনে আমাদের গত বারের তুলনায় এ বছর বেশি দামে পোশাক বিক্রি করতে হচ্ছে। গতবছরের তুলনায় এবারের শবে বরাতের পর থেকে বেচাকেনা ভালোই ছিলো  কিন্তু  রোজায় তেমন  কোন পাইকারদের উপস্থিতি নেই।

মসিউর আলম মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় এই বছর আমাদের জামা-কাপড়ে ব্যাট ট্যাক্স বেশি দেয়াও পাইকাররা  হিমসীম খাচ্ছে যার কারনে বিক্রি কমেছে। তিনি আরো জানান  তাদের সারা বছরের একটা টার্গেট থাকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বেচাকেনা করে দোকানের কর্মচারীদের বেতন বোনাস সবকিছু দেওয়ার। তবে বেচাকেনা আগের থেকে ভালো বলে জানান কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস মালিক সমিতির নেতারা। তবে সারা দেশের খুচরা এবং পাইকারি ক্রেতারা শোরুমগুলোতে দ্রুতই পাড়ি জমাবে এমনটাই প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।

মুসলিম এক্সকিলুসিভ এর মালিক, মুসলিম ঢালী  জানান, শবে বরাত এর পর থেকে ১০ দিন বেচা-কেনা ভালোই ছিলো। রমজানের প্রথম কয়েকদিন বেছা-কেনা খুবই খারাপ। তিনি বলেন শেষ সময়ে ব্যবসা ভালো হওয়ার আশা আছে বলে জানান।  তিনি দেশীয় তৈরি পোশাক বিক্রি করেন। তার ব্যবসার অবস্হা আলহামদুলিল্লাহ ভালোই, তার পাশাপাশি তিনি এটাও জানান এই বছর অনেকেই বিদেশি পোশাক বাদ দিয়ে দেশিয় পোশাকে সাড়া দিচ্ছেন।

আরো পড়ুনঃ কেরানীগঞ্জে আন্তঃজেলা অজ্ঞান পার্টির ১৭ সদস্য গ্রেফতার