২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার চার শতাংশে নামিয়ে এনেছে বিশ্বব্যাংক । এই হার সংস্থাটির আগের পূর্বাভাসের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমতে পারে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক দাতা সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ওপর প্রভাব ফেলেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু চলতি অর্থবছরে এর হার হতে পারে ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে। অর্থাৎ গড়ে চার শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’র অক্টোবর সংখ্যায় এসব তথ্য জানিয়েছে বৈশ্বিক দাতা সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, মধ্যবর্তী পয়েন্ট হবে ৪ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বিশ্বব্যাংক এপ্রিলে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু এখন সেখান থেকে ১ দশমিক ৭ শতাংশ পয়েন্ট কমলো। গত সরকারের আমলে ঘোষিত বাজেটে চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।
বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রাজনীতি ও অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগ ও শিল্পের প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বন্যার কারণে কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাবে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংক বলেছে, তাদের প্রাক্কলন হলো গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। গত বছরের ক্ষেত্রেও তার নিম্নমুখী সংশোধন এনেছে। বিশ্বব্যাংকের আগের প্রাক্কলন ছিল, গত অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে, দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী বিশ্বব্যাংক। আর্থিক খাতের সংস্কার, উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ, দেশীয় সম্পদের আরও বেশি ব্যবহার এবং বর্ধিত বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ধীর গতির পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উন্নত অর্থনীতিগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক সংযোগ স্থাপন করছে। এটি দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মূল উৎসগুলো, যেমন- রপ্তানি, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং পোর্টফোলিও বিনিয়োগের ওপর ঝুঁকি কমিয়েছে।
আরোও পড়ুনঃ নতুন গ্যাস সংযোগের বিষয়ে যা জানাল তিতাস