অনুমতি বাতিলের পরও আব্দুল্লাহপুরে হাট বসিয়েছে বিএনপির খোরশেদ

কেরানীগঞ্জ

ঢাকার কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে অস্থায়ী কুরবানির পশুর হাট বসানোর অনুমোদন বাতিল হওয়ার পরও প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যেই চলছে পশু বেচাকেনা। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খোরশেদ আলম প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জোরপূর্বক এই হাট বসাচ্ছেন।

গত ৩ জুন ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের নির্দেশনায় কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে পশুর হাট বন্ধের নির্দেশনা জারি করা হয়। ওই আদেশে হাট ইজারাদার খোরশেদ আলমকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল হাট সরিয়ে ফেলতে। কিন্তু নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে বাসস্ট্যান্ডেই পশু বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী রসুলপুর মাদ্রাসা মাঠের হাট থেকে মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণের খরচ পরিচালিত হয়। অতীতে কেউই এই মাদ্রাসার স্বার্থে সেখানে বিকল্প কোনো হাট বসানোর চেষ্টা করেননি। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম জোরপূর্বক হাট বসানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। অভিযোগ রয়েছে, ইউএনও’র প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সংবাদমাধ্যমে কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই মাত্র ৫১ হাজার টাকার নামমাত্র ইজারায় হাট বসানোর অনুমোদন দেয়া হয় তাকে। এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে এবং জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে সেই অনুমোদন বাতিল করা হয়।

কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খোরশেদ আলমের পারিবারিক মালিকানাধীন লিচুমিয়া সুপারমার্কেটের সামনের ফুটপাতে বাঁশের খুঁটি পুঁতে কুরবানির পশু বেঁধে রাখা হয়েছে। হাটে ক্রেতা ভিরাতে চলছে মাইকিং, চলছে পশু বিক্রি।

এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খোরশেদ আলম দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাত থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। তবে কুরবানির হাট বসিয়ে অল্প সময়ে বেশি অর্থ উপার্জনের লোভ সামলাতে না পেরে, প্রশাসনকে উৎকোচ দিয়ে কম টাকায় হাটের অনুমোদন নিয়েছেন। তারা আরও বলেন, “এলাকাবাসীর উচিত, এই ধরনের চাঁদাবাজ রাজনৈতিক নেতাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা।”

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে হাট বসানোর ব্যাপারে বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাদের সাথে কথা হলে তারাও এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের মতে একজন খোরশেদ আলমের জন্য আজকে পুরো কেরানীগঞ্জ দক্ষিন বিএনপির নাম খারাপ হচ্ছে। আদর্শ বহির্ভূত এমন নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত বলেও মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে রসুলপুর হাট কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবগত করতে চাইলেও সরকারি ছুটির কারণে অভিযোগপত্র প্রদান করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে মুঠোফোনের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুনকে অবহিত করা হয়।

হাট বসানোর নির্দেশনা অমান্য করার বিষয়ে খোরশেদ আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, নির্দেশনা অমান্য করে হাট বসানোর বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।