কেরানীগঞ্জে হাসপাতালে প্রসবকালে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে নবজাতকের মর্মান্তিক মৃত্যু

কেরানীগঞ্জ

ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রসবকালীন সময় নবজাতকের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১ জুন) রাতে উপজেলার কদমতলীতে অবস্থিত আল বারাকা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী প্রসূতির নাম সাথী বেগম (৩৮)। তাঁর স্বামী মাইনুদ্দীন জানান, রোববার সন্ধ্যায় প্রসব ব্যথা শুরু হলে স্ত্রীকে আল বারাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাঁকে অস্ত্রোপচার কক্ষে (ওটি) নেয়া হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, তখন কোনো চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না। হাসপাতালের নার্স আমেনা আক্তার ও মিডওয়াইফ শাহিনা আক্তার নবজাতকের স্বাভাবিক প্রসব করানোর চেষ্টা করেন। এ সময় টানাহেঁচড়ার ফলে নবজাতকের মাথা বের হয়ে এলেও দেহ গর্ভে আটকে থাকে। পরবর্তীতে রাত ১১টার দিকে একজন চিকিৎসক এসে সিজারিয়ানের মাধ্যমে দেহটি বের করেন, তবে ততক্ষণে নবজাতক মারা যায়।
অভিযুক্ত মিডওয়াইফ শাহিনা আক্তার জানান, “প্রসূতি মা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন এবং শিশুর আকার স্বাভাবিকের তুলনায় বড় ছিল। পরিবারের অনুরোধেই স্বাভাবিক প্রসব করানো হচ্ছিল। মাথা আটকে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটি চিকিৎসা ভুল নয়, বরং মা’কে বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।”
এ ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত নার্স ও মিডওয়াইফকারীকে আটক করে। সোমবার নিহত নবজাতকের পিতা কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, হাসপাতালটির মালিক রোহিতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সোলায়মান জামান। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক। বর্তমানে হাসপাতালটি পরিচালনা করছেন খাইরুল ইসলাম রিপন। তিনি বলেন, “একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করছি।”

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মনিরুল হক ডাবলু বলেন, “একজন নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”